৫৩০ টাকায় ঘুরে আসুন চাঁদপুর

 চাঁদপুর
১টি ভরা পূর্ণিমার রাত ও লঞ্চ জার্নি।

ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে আপনি সদর ঘাট যাওয়ার গাড়ি পেয়ে যাবেন। সদরঘাটেই পৌছে দৌড় দিলাম খাওয়ার দোকানে পেট পূজো করতে,বিল আসলো ৬০ টাকা, চাঁদপুরে যাওয়ার জন্য সেরা দুটি লঞ্চ হচ্ছে রফরফ-২ ও ময়ূর-৭। আপনি চাইলে যেকোনো একটাতেই উঠে পড়তে পারেন,যদি চেয়ারে বসে যেতে চান, তাহলে ভাড়া লাগবে ১৩০ টাকা [ময়ূর-৭ ঢাকা থেকে ছাড়ে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে, চাঁদপুর থেকে রাত ১২টা ১৫ মিনিটে। রফরফ-২ ঢাকা থেকে রাত ১২টায় ও চাঁদপুর থেকে দুপুর ১২টায় ছাড়ে] ঘড়িতে রাত ১২টার কাটা প্রায় ছুয়, লঞ্চে উঠে পড়লাম..

লঞ্চ জার্নি শুরু হবে বুড়িগঙ্গা নদী থেকে। আস্তে আস্তে ধলেশ্বরী আর শীতলক্ষ্যা পাশ কাটিয়ে লঞ্চ গিয়ে উঠবে মেঘনায়। কেবিনে কাঁথা মুড়ি দিয়ে না ঘুমিয়ে, এদিক ওদিক না ঘুরে উঠে যান ছাদে। অসাধারণ কিছু আপনার চোখে পড়বে,পূর্ণিমার চাদের আলোয় হয়তো পৃথিবীটাকে আপনার নতুন মনে হবে,চারপাশে শুন শুন নিরবতা, চাঁদোর আলোয় একটি বিশাল দানব সব কিছু পাশ কাটিয়ে গর্জন গর্জন করতে করতে এগিয়ে যাচ্ছে, আশেপাশের প্রকৃতির রূপ দেখবেন অন্যভাবে, নিজেকে হয়তোবা মনে হবে ঘোরের মধ্যে আছেন।

রাত ৩টা পর্যন্ত পূর্ণিমার চাঁদটা উপভোগ করে নেমে আসলাম নিচের ডেকে, ডেকে বিশাল জায়গা খালি আছে, সন্গী ছিলো ইউকিলেলে, | মানুষ জমায়তে হতে শুরু করলো, সবাই মিলে গান করতে করতে আবিষ্কার করলাম আমরা গন্তব্যস্থলে পৌছে গেছি।

চাঁদপুরে নেমে কিছু ঘণ্টা হাতে রেখে একটু ঘুরে নিতে পারেন আশপাশ। দেখার মতো জায়গার অভাব নেই। আর চাঁদপুরে এসে ইলিশ না খেয়ে বাড়ি ফেরার মতো বোকামি করবেন না। যদিও এখন আসল চাঁদপুরের ইলিশ খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য। তবে ভাগ্যে থাকলে হয়তো রুপালি ইলিশের স্বাদ নিতে পারবেন। লঞ্চঘাটের আশপাশেই বেশ কিছু রেস্তোরাঁ রয়েছে। চাইলে কালীবাড়ি মোড়ে গিয়েও খেতে পারেন। লঞ্চ জার্নির পর খাওয়াটা এককথায় অসাধারণ লাগবে। চেষ্টা করবেন হালকা কিছু বাট অনেক এনার্জি আছে এমন কিছু খেতে, আমার বিল আসছিলো ৫০ টাকা।

এরপর সোজা চলে যাবেন বড় স্টেশনে, মিনিট দশেক হাটলেই পৌছে যাবেন, আমার মনে হয় মানুষের জীবনে একবার হলে ও এই জায়গায় আসা দরকার, এত দারুণ জায়গাটা লিখে ও হয়তোবা বোঝাতে পারবোনা, পদ্মা, মেঘনা, ডাকাতিয়া তিনটি নদীর মিলন মেলা হলো বড় স্টেশন, গিয়েই দেখতে পাবেন অত্যন্ত গোছানো একটি পার্ক, পার্কের একটু আগালেই দেখবেন পাশে নৌকা আছে, নৌকা দামাদামি করে উঠে পড়ুন, ঘন্টা ১০০ করে নিবে।

বেশ খানিক জায়গা ঘুরে আসুন, তিনটি নদীর জায়গাতেই মিলনমেলা কিন্তু তিনটি নদীই আলাদা ভাবো চিহ্নিত করা যায়, তবে ভুলে ও পানিতে নামার চিন্তাভাবনা করবেন না, মোহনায় অসম্ভব স্রোত থাকে।

ঘুরে ফিরে ৯টা নাগাদ উপস্থিত হোন লঞ্চ ঘাটে, হালকা নাস্তা (আমার আসছিলো ৩০টাকা) সেরে উঠে পড়ুন লন্চে, ২টা নাগাদ সদরঘাটে চলে আসলাম, বাস যোগে পান্থপথ (২০ টাকা) মানিব্যাগ খানার দিকে তাকিয়ে মনটা কেমন জানি আত্মতৃপ্তিতে ভরে উঠলো,পকেটে অবশিষ্ট ছিলো আরো ৫০ টাকা, এক কাপ রং চা গলদগরণ করে বাসায় ঢুকে পড়লাম।

খরচঃ
৬০(খাবার)+ ১৩০(ভাড়া)+৫০(খাবার)+১০০(ভাড়া)+১৩০(ভাড়া)+৩০(খাবার)+২৫(ভাড়া)+৫(রং চা) = ৫৩০টাকা

বি দ্র : আসুন আমরা যথা স্থানে ময়লা ফেলি, একটি সুন্দর পৃথিবী গড়তে সাহায্য করি।

========================================================================

মন্তব্য অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।

Post a Comment

[blogger]

Author Name

{picture#https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1196479430442738} YOUR_PROFILE_DESCRIPTION {facebook#https://www.facebook.com/alwasikbillah} {twitter#https://twitter.com/awasikb} {google#https://plus.google.com/112469283873821392454} {instagram#https://www.instagram.com/awasikb}

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.