ট্রাভেল কার্ড কোনটি ভালো?
EBL এর ট্রাভেল কার্ড নাকি SBI (স্টেটব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার ) ট্রাভেল কার্ড?
আসুন বিস্তারিত বলছি...
অনেকে দেশের বাইরে ঘুরতে বা চিকিৎসার জন্য যান এবং যাওয়ার আগে ট্রাভেল কার্ড করে নিয়ে যেতে পছন্দ করেন বা অনেকে করতে ইচ্ছুক কিন্তু কোন কার্ড তার জন্য ভালো হবে সেটা বুঝতে পারেন না, ফেসবুকে অনেকের অনেক মন্তব্য দেখে কনফিউজড হয়ে যান।
মূলত যাদের দেশের মধ্যে বুথ থেকে টাকা উঠানোর অভ্যাস আছে তারাই এই ট্রাভেল কার্ড করে থাকে তবে এর ব্যতিক্রমও অনেকে ব্যবহার করছে প্রতি নিয়ত। ট্রাভেল কার্ড এ আপনি সার্ক দেশ গুলোতে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত লোড করে নিয়ে যেতে পারবেন এবং বিদেশে গিয়ে ওই কার্ড দিয়ে প্রায় সব যায়গাতে পেমেন্ট দিতে পারবেন যেমন শপিং মল, মেডিকেল শপ, হাসপাতাল, হোটেল ও রেস্টুরেন্ট গুলোতে।
মূলত বাংলাদেশের টপ ব্যাংক গুলো এই কার্ড দিয়ে থাকে এবং ট্রাভেল কার্ড নিতে হলে অবশ্যই আপনার পাসপোর্ট থাকা বাধ্যতামূলক তারপর ২ কপি ছবি, ন্যাশনাল আইডি কার্ড এর কপি ও টাকা নিয়ে গেলেই ৬০ মিনিটের মধ্যে ট্রাভেল কার্ড পেয়ে যাবেন।
যাইহোক আজকে দুটি ব্যাংকের ট্রাভেল কার্ড নিয়ে খুটিনাটি আলোচনা করবোঃ
SBI কার্ড |
SBI কার্ড এর বৈশিষ্ট্যঃ
১। এই কার্ড এর মেয়াদ ৫ বছর পর্যন্ত।
২। কার্ড টি করতে এক্সট্রা ১৪০০ টাকা ফি কেটে নিবে একবারই যা ৫ বছরের মধ্যে আর নিবে না।
৩। যে কোন পরিমান ডলার লোড দিতে আরো ২৩০ টাকা এক্সট্রা ফি কেটে নিবে। যত বার ডলার লোড দিবেন ততোবার ই ২৩০ টাকা কেটে নিবে।
৪। এই কার্ড ভারতের ভিসা লেখা সম্বলিত যে কোন বুথ থেকে রুপি উঠাতে পারবেন।
৫। এই কার্ড দিয়ে হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মলে বিল দিতে পারবেন।
৬। এই কার্ড করলে ভারতীয় ভিসার জন্য এপ্লাই করতে পারবেন (যদি ব্যাংক স্টেটমেন্ট না দিতে পারেন)।
অসুবিধাঃ
১। এই কার্ড দিয়ে কোন ওয়েবসাইট থেকে কোন কিছু বুকিং দিতে পারবেন না যেমন ট্রেন/এয়ার/হোটেল বুকিং করতে পারবেন না।
২। প্রতিবার ডলার লোড দিতে হলে কার্ড সাথে করে ব্যাংকে যেতে হবে এবং পাসপোর্ট বই, ন্যাশনাল আইডি কার্ড ও ২ কপি ছবি নিয়ে যেতে হবে, নতুবা ডলার লোড দিবে না।
৩। প্রতিবার ডলার লোড দিতে ২৩০ টাকা অতিরিক্ত ফি হিসেবে কেটে নেই।
৪। এটি এম বুথ থেকে উত্তোলন করলে প্রতিবার ১ ডলার করে ফি কাটে
EBL কার্ড |
EBL কার্ড এর বৈশিষ্ট্যঃ
১। এই কার্ড এর মেয়াদ ৩ বছর পর্যন্ত থাকে।
২। কার্ড টি করতে ৫৭৫ টাকা এক্সট্রা ফি কেটে নিবে যা ব্যাংকে ডিপোজিট স্লিপের মাধ্যমে জমা দিতে হয় এবং এই ফি ৩ বছরের জন্য একবার ই কেটে নিবে আর কখনো নিবে না।
৩। ভারত ও অন্যান্য দেশের ভিসা লেখা সম্বলিত এটি এম বুথ থেকে রুপি বা অন্য কারেন্সি উঠাতে পারবেন।
৪। এই কার্ড দিয়ে হাসপাতাল, রেস্টুরেন্ট, শপিং মলের বিল দিতে পারবেন।
অসুবিধাঃ
১। এটি এম বুথ থেকে উত্তোলন করলে ১ ডলার করে ফি কেটে নেই যা SBI এর ক্ষেত্রেও একই নিয়ম।
এক্সট্রা সুবিধাঃ
১। এই কার্ড দিয়ে বিশ্বের প্রায় নামিদামি সব ওয়েবসাইট থেকে এয়ার টিকিট/হোটেল বুকিং করতে পারবেন, কোন ঝামেলা ছাড়াই। এমনকি ভারতের রেলের টিকিটও করতে পারবেন যদি ট্রেনের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড থাকে।
২। ডলার যে কেউ ব্যাংকে গিয়ে ডিপোজিট স্লিপ ফিলাপ করে লোড দিতে পারে।
৩। একবার e-commerce ট্রাঞ্জাকশন এক্টিভ করে নিলে ৩ বছরের মধ্যে আর করা লাগে না।
৪। ওয়েবসাইট থেকে কিছু ক্রয় করার সময় OTP মোবাইল ও ইমেইল উভয় সিস্টেমে আসে।
এবার আসুন ভিন্ন বিষয়ের পার্থক্য বলি
SBI কার্ড নিলে ৫ বছরে ১৪০০ টাকা এবং ধরে নিলাম প্রতি বছর ১ বার করে ভারত বা অন্য দেশে যাবেন তাহলে আরো ২৩০ *৫ = ১১৫০ টাকা, তাহলে ৫ বছরে খরচ হচ্ছে (১৪০০+১১৫০) = ২৫৫০ টাকা
তাহলে গড় হিসেব করলে প্রতি বছর কার্ড ফি বাবদ ৪৫০ টাকা করে কেটে নিচ্ছে।
EBL কার্ড নিলে ৩ বছরে ৫৭৫ টাকা খরচ হচ্ছে কিন্তু দুই বছর মেয়াদ কম দিচ্ছে, যদি মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আবারো করি সেক্ষেত্রে আরো ৫৭৫ টাকা লাগবে তাহলে ৬ বছরের জন্য লাগছে ১১৫০ টাকা।
তাহলে গড় হিসেব করলে প্রতি বছর কার্ড ফি বাবদ ১৯১.৬৬ টাকা করে কেটে নিচ্ছে।
মূলত ভারতের স্টেট ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার কার্ড করা হয়ে থাকে সিম্প্যাথির জন্য মানে ভিসা পেতে হয়তো সহজ হতে পারে যা সাইকো লজিক্যাল ভাবে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা ইফেক্ট পড়ে মানে ভিসা পেয়ে যাবে। কিন্তু অন্য ব্যাংক থেকে ট্রাভেল কার্ড করলেও আপনি ভিসা পাবেন।
মূলত ইন্ডিয়ার এম্বাসিগুলো স্টেটব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার শাখা থেকে কার্ড করার জন্য মানসিক ভাবে সাধারণ মানুষকে প্রেসার করে থাকে, যদিও সরাসরি কখনো বলে না যে এখান থেকেই করতে হবে। তাদের ডলারও সেল হলো, সেই সাথে কার্ড তো আছে এবং ব্যবসাও ভালো চললো। ব্যবসার পরিধি বাড়াতে যে কেউ তাদের অনুকুলে যাবে এমন কাজ করবেই যা স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে, যেহেতু স্টেটব্যাংক অফ ইন্ডিয়া ভারতীয় এম্বাসির নিয়ন্ত্রণকর্তা তাই তারা এই টুকু এক্সট্রা সুবিধা মানসিক ভাবে হিট করে নিয়ে চলছে।
মন্তব্যঃ
যেহেতু অনেকেই ভারতে ঘুরতে যান আর যাদের ব্যাংক একাউন্ট নেই তারা হয়তো SBI কার্ড করে নিতে পারেন কিন্তু ব্যাংক একাউন্ট দিয়ে যদি ভিসা পেয়ে যান তাহলে ট্রাভেল কার্ড কোনটি করা উচিত তা এতোক্ষনে বিস্তারিত পড়ে বুঝে গেছেন।
ঘরে বসে বিশ্বের যে কোন এয়ারের টিকিট বুকিং দিন খুব সহজে। পেমেন্ট একদম সহজ বিকাশ বা রকেট দিয়ে আজই বুকিং করুন।
কিপ ট্রাভেলিং, স্টার্ট ব্যাকপ্যাকিং !
Tour on budget
Budget travel
Cheap places to travel
বাংলাদেশ
খবর
========================================================================
মন্তব্য অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।
Post a Comment