তুক অ বা লামোনই ঝর্ণা |
তুক অ বা লামোনই ঝর্ণা
এই ঝর্ণা টি পার্বত্য বান্দরবান জেলার আলিকদমে অবস্থিত। আর ঝর্ণার নাম সাধারনত বেশীর ভাগই ঝিরির নাম অনুসারে হয়। ঝর্ণাটি যে ঝিরিতে তার নাম ব্যাঙ ঝিরি। যেহেতু মুরং এলাকায় অবস্থান তাই তাদের ভাষায় ব্যাঙ কে " তুক" বলে আর ঝিরিকে "অ " বলে। ডামতুয়া অর্থ হলো এর খাড়া আকৃতির জন্য এর দেয়াল বেয়ে উপরে ব্যাঙ বা মাছ উঠতে পারেনা। আর ওয়াজ্ঞাপারাগ অর্থ পাহাড় / উচুঁ স্থান থেকে পানি পড়া। তাই তারা এক কথায় তুক অ ডামতুয়া ওয়াজ্ঞাপারাগ সহ উনাদের ভাষায় মিলিয়ে সংক্ষেপে আরো কিছু নামই বলে। তবে আমরা বেশীর ভাগই ঝর্নাকে, ঝর্না ( মাতৃ ভাষার কারনে) ও সাইতার ( বম এলাকায় বেশী আনাগোনার কারনে) বলে থাকি।তাই তাদের নামেই "তুক অ" ঝর্ণা বলতে পারি।
আর এখানে দুই দিক থেকে পানি পড়ার কারনে ঝর্ণা সহ খোলা স্থানটিতে চাঁদের আলোতে অন্য রকম সৌন্দর্যের অবতরনের কারনে একে স্থানীয় মুরং ভাষায়" লামোনই" ঝর্ণা ( লামো= চাঁদ ও নই= আলো) বলে। বিস্তারিত বলা হচ্ছে ক্লিয়ার করার জন্য।
কিভাবে যাবেন:
ঢাকা থেকে চকরিয়া - আলিকদম - পানবাজার হয়ে ১৭ কি:মি: যেতে হবে। অথবা বান্দরবান থেকে থানচি হয়ে ১৭ কি:মি: যেতে হবে। ১৭ কি:মি: হলো আলিকদম ও থানচির অপরুপ সৌন্দর্যের পাহাড়ি রাস্তাটি। ১৭ কি:মি: এর পাশে আদু পাড়ার অবস্থান। আদু পাড় থেকে পামিয়া মেম্বার পাড়া - তামতই পাড়া - নামসাক পাড়া - কাখই পাড়া হয়ে ঝর্ণায় যেতে হবে। আদু পাড়া থেকে ঝর্ণায় আসা যাওয়া মিলিয়ে ৬ ঘন্টার মত লাগবে। এর আশে পাশেও কিছু ঝর্না আছে তাই দুই রাত থাকার সময় নিয়ে গেলেই ভাল ভাবে দেখে আসতে পারবেন। তবে বর্ষায় গেলে দুই দিক থেকে বেশী পানি পড়া দেখতে পারবেন। এটাও বর্ষার মাঝামাঝি হলেও সপ্তাহ খানেক বৃস্টি না হবার কারনে এক দিকে তেমন পানি ছিল না। ছবিটি গত বছরের।
*** এই দিকে (আলিকদমে) থাকা খাওয়া ও গাইড খরচ রুমা বা থানচির মত বানিজ্যিকরন নয়। এখনো এই অঞ্চলের অনেক মানুষেরা থাকার জন্য কোন টাকা পয়সা নেয় না। গাইড বাবদও অনেক কম নেয়। যা অনেক সময় গ্রুপের সদস্যদের ম্যানেজ করার ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। তাই অহেতুক অতিরিক্ত টাকা পয়সা দিয়ে উনাদের আন্তরিকতার বদলে ব্যবসায়ীক মানষিকতার মনোভাবে রুপান্তরিত করবেন না।
বি: দ্র:
আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ থাকবে নিজের দেশ দেখার অধিকার সবারই সমান। কিন্তু যাবার আগে ভেবে সদস্য সংখ্যা নির্ধারন করবেন। কোন স্থানে যাচ্ছেন সেই স্থানের পরিবেশ সংস্কৃতির উপর কোন প্রভাব না পড়ে সেই দিকে খেয়াল রাখবেন। আর আপনার ও আপনার সংগী দ্বারা যাতে পরিবেশের কোন ক্ষতি না হয়। ধুপপানি ঝর্ণায় গত বছরের জন স্রোতের অবস্থার জন্য এমনিতে নিজেকে অপরাধি লাগছে। তারপরও দিলাম। অবশ্যই এটাকেও ধুপপানি বানাবেন না। ভবিষ্যতে আরো দেখার সুযোগ হবে আশা করি। আমরাই রক্ষা করবো আমাদের সৌন্দর্যকে, আগলে রেখে লালন করবো পরবর্তী প্রজন্মের জন্য।
========================================================================
মন্তব্য অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।
Post a Comment