হাম হাম এর আদ্যোপান্ত

হাম হাম

এবার বের হয়েছিলাম শুধুমাত্র হাম-হাম ঝর্ণা দেখার উদ্দেশে। আমরা ৯ জন। আমাদের পুরা হাম হাম ট্রিপটা ছিল অ্যাডভেঞ্চার এ ভর্তি।

প্রথমেই বলে রাখি, হাম হাম কিংবা হামহাম বা চিতা ঝর্ণা, বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার রাজকান্দি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গভীরে কুরমা বন বিট এলাকায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক জলপ্রপাত বা ঝরণা। জলপ্রপাতটি ২০১০ খ্রিস্টাব্দের শেষাংশে পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মার সাথে দুর্গম জঙ্গলে ঘোরা একদল পর্যটক আবিষ্কার করেন। দুর্গম গভীর জঙ্গলে এই ঝরণাটি ১৩৫, মতান্তরে ১৪৭ কিংবা ১৬০ ফুট উঁচু, যেখানে বাংলাদেশের সবচেয়ে উঁচু ঝরণা হিসেবে সরকারিভাবে স্বীকৃত মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের উচ্চতা [১২ অক্টোবর ১৯৯৯-এর হিসাব অনুযায়ী] ১৬২ ফুট।তবে ঝরণার উচ্চতা বিষয়ে কোনো প্রতিষ্ঠিত কিংবা পরীক্ষিত মত নেই। সবই পর্যটকদের অনুমান। তবে গবেষকরা মত প্রকাশ করেন যে, এর ব্যপ্তি, মাধবকুণ্ডের ব্যাপ্তির প্রায় তিনগুণ বড়।

হাম হাম ঝরণায় এপর্যন্ত (নভেম্বর ২০১১) গবেষকদের পক্ষ থেকে কোনো অভিযান পরিচালিত হয়নি। সাধারণ পর্যটকেরা ঝরণাটির নামকরণ সম্পর্কে তাই বিভিন্ন অভিমত দিয়ে থাকেন। কেউ কেউ ঝরণার সাথে গোসলের সম্পর্ক করে "হাম্মাম" (গোসলখানা) শব্দটি থেকে "হাম হাম" হয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন। কেউ কেউ মনে করেন, সিলেটি উপভাষায় "আ-ম আ-ম" বলে বোঝানো হয় পানির তীব্র শব্দ, আর ঝরণা যেহেতু সেরকমই শব্দ করে, তাই সেখান থেকেই শহুরে পর্যটকদের ভাষান্তরে তা "হাম হাম" হিসেবে প্রসিদ্ধি পায়। তবে স্থানীয়দের কাছে এটি "চিতা ঝর্ণা" হিসেবে পরিচিত, কেননা একসময় এজঙ্গলে নাকি চিতাবাঘ পাওয়া যেত।

কিভাবে যাবেনঃ 

ঢাকা থেকে হাম হাম যেতে হলে সর্ব প্রথম আমাদের যেতে হবে সিলেটের শ্রীমঙ্গলে। শ্রীমঙ্গল সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজার জেলার অন্তর্ভুক্ত একটি উপজেলা। ঢাকা থেকে বাসে যেতে ৪-৪.৩০ ঘন্টা সময় লাগে। ট্রেনে যেতে ৫ ঘন্টা সময় লাগে। 
  • ঢাকা থেকে শ্রী্মঙ্গল ট্রেনে যেতে পারেন। উপবন এক্সপ্রেস ভাড়া  ৬০/- (২য় শ্রেণি), ২০০/-(শোভন), ২৪০/-(শোভন চেয়ার)। রাত ১০টা (বুধবার বন্ধ)। ছেড়ে যায় কমলাপুর থেকে।
  • বাস এনা ৪০০ টাকা হানিফ ৩৮০ টাকা (সন্ধ্যা ৬টায় শ্রী্মঙ্গল থেকে ঢাকা)। খরচ কমাতে চাইলে ট্রেনে যেতে পারেন। তবে যাওয়ার ২দিন আগে টিকিট কাটতে হবে।

আপনাদের সুবিধার জন্য আরও কিছু তথ্যঃ 

(তথ্যগুলো এক বছর আগের, বর্তমান টা জানি না। )
  • প্রতিদিন ঢাকা থেকে তিনটি ও চট্টগ্রাম থেকে দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে করে শ্রীমঙ্গল আসতে পারেন। 
  • দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, পঞ্চগড়, থেকে সরাসরি বাসে শ্রীমঙ্গল আসা যাবে। দিনাজপুর, সৈয়দপুর, নীলফামারী, যশোর, খুলনা থেকে ট্রেনে ঢাকা হয়ে শ্রীমঙ্গল আসা যায়।
  •  ঢাকার সায়েদাবাদ থেকে হানিফ এন্টারপ্রাইজ ও শ্যামলী পরিবহনে করে শ্রীমঙ্গলে আসতে পারেন। প্রতি ৩০ মিনিট পর পর শ্রীমঙ্গলের উদ্দেশে এসব বাস ছেড়ে আসে। ভাড়া ৩৮০ টাকা। সময় লাগবে চার ঘণ্টা। 
  • ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলের ট্রেনের ভাড়া এসি সিট ৫১২ টাকা (জয়ন্তিকা/পারাবত), এসি সিট কালনী ৪২৬ টাকা, স্লিপিং বার্থ ৪৯৫ টাকা, এসি স্লিপিং বার্থ ৮১৬ টাকা, ১ম চেয়ার ২৯৫ টাকা, শোভন চেয়ার ২২৫ টাকা, শোভন ১৮৫ টাকা। চট্টগ্রাম থেকে শ্রীমঙ্গলের ভাড়া ১ম বার্থ সিট (উদয়ন) ৫৯৫ টাকা, এসি সিট (স্নিগ্ধা) ৫২৪ টাকা (পাহাড়িকা), ১ম সিট ৩৬৫ টাকা (পাহাড়িকা), শোভন ২৩০ টাকা (পাহাড়িকা/ উদয়ন)। 
ঢাকা থেকে সিলেটগামি যে কোন ট্রেন এ যেতে পারবেন। এ ছাড়াও হানিফ, শ্যামলী, এনা পরিবহনের বাস ও যায় স্রীমঙ্গলের উদ্দেশে । 

স্বপ্নের হামহাম যাত্রাঃ 

আমরা খরচ কমাতে উঠে পড়লাম ট্রেনে, কমলাপুর ট্রেন স্টেশন থেকে রাত ১০ টার ট্রেনে, শ্রীমঙ্গলে পৌঁছে গেলাম ভোর সাড়ে ৩ টায়। এত ভোরে কি করব? স্টেশনেই হাঁটাহাঁটি করে, চা খেয়ে ভোর হবার অপেক্ষায় থাকলাম। কিছুক্ষণ পর সবাই মিলে ভাবলাম একটা হোটেল এ রুম নিতে হবে একটু রেস্ট আর গোসল করার জন্য। এরই মাঝে আমাদের একজন অসুস্থ হয়ে পড়েছিল।তাই রুম নেওয়া টা আবশ্যক হয়ে পড়ল। ট্রেন ষ্টেশন থেকে হেটে একটু সামনে গিয়ে একটা হোটেল ঠিক করলাম। রেস্ট নিয়ে ভোর বেলাতেই গোসল করে নিলাম বরফ ঠাণ্ডা জলে। পথে পরে অবশ্য আরও ১০-১২ বার গোসল হয়ে গেছিল বৃষ্টিতে।

যাত্রার শুরু ১৪/০৫/১৬ ভোর ৬টায়।  হোটেল ছেড়ে দিয়ে নাস্তা করার জন্য আসলাম এক হোটেল এ। এত কম দামে এত ভালো খাবার আর কখনও খাওয়া হয় নাই। খাসির মাংসের খিচুড়ি মাত্র ২০ টাকা প্লেট। আমরা তো সবাই অবাক হয়ে গেলাম। ভর পেট খাওয়া শেষ করে ৭ টা নাগাদ আমাদের আগের থেকে ঠিক করা  জীপ এ চেপে বসলাম। জীপ চলতে থাকল হামহামের উদ্দেশ্যে । এ দিকে আকাশ কালো করে মেঘ করল। শুরু হল বৃষ্টি। অঝরে বৃষ্টি। জীপের ভেতর আমরা। জীপ ছুটে চলছে পাহাড়ি চা বাগানের ভেতর দিয়ে আঁকাবাঁকা পথ ধরে। এত সুন্দর আবহাওয়া আর দৃশ্য দেখে সবাই মিলে গান শুরু করলাম। এই বৃষ্টি আসে আবার এই থেমে যায়। অন্যরকম দৃশ্য। মনের ভিতর একধরণের চাপা ভয় আর উত্তেজনায় মনে হচ্ছিল পথ যেন আর শেষ হয় না । পথে পড়ল একটা চা এর ফ্যাক্টরি। নাম টা মনে নেই।

শ্রীমঙ্গল থেকে ছেড়ে যাওয়া ৪র্থ ট্রিপ টা ছিল আমাদের। ৮ঃ০০ টার একটু পরেই পৌঁছে গেলাম কলাবাগান, এই কলাবাগান থেকেই পায়ে হেঁটে হামহাম যাত্রা শুরু করতে হয়। এর আগেই আমরা ফোনে কথা বলে গাইড ঠিক করে রেখেছিলাম। জীপ থেকে নেমেই ১০ টাকায় একটি করে টি বাঁশ কিনে রওনা হলাম ।

অসাধারন সৌন্দর্য। চারিদেকে ফাকা সবুজ মাঠ, মাঝখানে দিয়ে সাদা মাটির সরু রাস্তা। আকাশে কালো কালি মেঘ, ঝোড় বাতাস  উত্তেজনা ৪ গুন পরিমান বৃদ্ধি পেল । এই লেখাটি যখন লিখছি আমার চোখের সামনে সব ভেসে উঠছে। পাঠক সেই দৃশ্য আপনাদেরকে আমি লিখে বুঝাতে পারব না। পথের দুই পাশে ছিল গারো এলাকা। আমাদের গাইড ও গারো ছিল।

একটু হাঁটার পর সামনে পেলাম প্রথম পাহাড়। পাহাড়ে প্রথম পা রাখার সাথে সাথেই শুরু হল তুমুল বৃষ্টি। আমাদের যাদের চোখে চশমা ছিল তাদের তো কান্না কাটি অবস্থা। সামনে কিছুই দেখতে পাই না। আবার চশমা খুললেও কিছুই দেখি না। এ দিকে পাহাড় সোজা নিচে নেমে গেছে। পা ফসকালেই সোজা নিচে।

হাম হাম ঝিরি পথ
 প্রথমেই ৭ টি সাঁকো পার হতে হয় । এরপর ই শুরু হতে থাকবে আসল কষ্ট আর মজা পাহাড়ি অনেক উচুনিচু পথ যা বৃষ্টিতে ভয়ঙ্কর রকমের পিচ্ছিল হয়ে আছে , একটু অসাবধান হলেই একবারে নিচের দিকে, ভয় নেই মরবেন না তবে আর কখনও হাঁটতে পারবেন কিনা সেটা বলা যায় না। বৃষ্টিতে পুরো রাস্তাতাই ভয়ঙ্কর সুন্দর রুপ ধারন করেছিল। মনে হবে এই বুঝি গেলাম । যাই হোক সব বাঁধা পেরিয়ে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে চলতে লাগলাম । এরই মাঝে ধুপ ধাপ শব্দ করে পোলাপান আছাড় খাওয়া শুরু করল খাড়া পথে। অনেকে আবার এমন ভাবে পড়েছিল আর একটু হলেই ভবলীলা সাঙ্গ হওয়ার মত অবস্থা।

আমাদের গ্রুপ এর দুইজনের দায়িত্বে দেওয়া হয়েছিল খাবার পানি বহনের। তো সেই মহাশয়েরা উত্তেজনার প্রকোপে ভুল করে পানি জীপে ফেলে রেখে এসেছে। পথিমধ্যে পানির প্রয়োজন হলে দেখা গেল পানি নেই। এত লম্বা পথ, সাথে পানি নেই। আমাদের সাথে আবার ছিল ৯০+ কেজি ওজনের এক বন্ধু, যে অনেক জিদ ধরে এসেছে। এর আগে তার ট্র্যাকিং এর কোন অভিজ্ঞতা নেই। সব মিলিয়ে আমাদের হাঁটার গতি একদম কমে গেল। আমাদের পরে এসেও অনেক গ্রুপ আমাদের ক্রস করে চলে গেল। তাদের ভেতর আবার কিছু মেয়েও ছিল। দেখে মনে হল বাহ আমাদের দেশের মেয়েরাও অনেক এগিয়ে গেছে। উপরে আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টির পানি, কিন্তু আমাদের খাওয়ার পানি নেই। পরে কলার পাতা দিয়ে ফানেল এর মত করে মুখে নিয়ে আকাশের দিকে ধরে পানির চাহিদা কিছুটা পুরন করা হল। ভাগ্যিস বৃষ্টি ছিল। আমাদের গাইড আমাদের হাঁটার গতির উপর বিরক্ত হয়ে সামনে চলে গেল আমাদের ফেলে...

এর আগে আমাদের মোটামুটি সবারই অনেক ট্র্যাকিং করার অভ্যাস ছিল। কিন্তু সেবারই মফিজ পুরা কট হয়ে গেল সবার।

পথেই দেখা হল আমাদের আগে আসা একটা গ্রুপের সাথে । প্রায় অর্ধেক রাস্তা আসার পর তারা আর সামনে না যাবার সিদ্ধান্ত নিল এবং শেষমেশ ফিরেও গেল। একে তো পানি নেই, তার উপর আছাড় খেতে খেতে সবার অবস্থা খারাপ, এবং আমাদের ঐ ওভার ওয়েট বন্ধু টার হঠাৎ প্রেসার লো হয়ে গেল। পানির পিপাসায় সে আর হাটতে পারছে না। পথের মাঝে বসে পড়ল, আর সামনে যাবে না। পানি খাবে। পরে উপায় না পেয়ে ওর গলায় গামছা ছিল, ঐটা বৃষ্টির পানিতে ভিজিয়ে চিপে চিপে ওকে পানি খাওয়ানো হল। এর পর জোর করে টেনে দাড় করিয়ে সামনে একজন আর পিছনে একজন ধরে ওকে গাইড করে নিয়ে চললাম আমরা। সামনের রাস্তা দেখে ভয়ে গলা যেন শুকিয়ে যাচ্ছিল ।

একটু পানি খেয়ে কিছুটা সাহস সঞ্চয় করব তার ও উপায় নেই, সাথে পানি নেই।  আবার পা বাড়ালাম। চলতে চলতে উঠে গেলাম পাহারের সবচাইতে উচু পিকটায় , এবার নামার পালা । আগেই বলেছিলাম বৃষ্টির কারনে পথ অনেক পিচ্ছিল ছিল তাই নামতে গিয়ে বারবার মনে হচ্ছিল থাক আর না যাই কিন্তু কিছুদুর এগোনোর পর শুনতে পেলাম হামহাম এর আওয়াজ, মনে হল যেন পৌঁছে গেছি কিন্তু না পথের এখনও অনেক বাকি । উত্তেজনা এবার ৪*৪=১৬ গুনে উন্নিত হল ।

ও পথে এক্সট্রা আকর্ষণ জোঁকের কথা তো বলাই হল না...

এবার এসে পৌঁছলাম অনেক খাড়া এক পথে যা একেবারে পাহারের নিচে চলে গেছে। সাবধানে সেই রাস্তা পেরিয়ে নেমে পড়লাম ঝিরিপথে। নামার পথে আছাড় খেল না এমন একজন ও নেই। আমি এবার প্রথম আছাড় টা খেলাম, আমি যেহেতু আমাদের ওভার ওয়েট বন্ধুর সামনে থেকে তাকে গাইড করছিলাম, তাই সে এসে পড়ল একেবারে আমার উপর। অনেক কষ্টের আর বিপদের পর নেমে আসলাম ঝিরি পথে।

বৃষ্টির কারনে ঝিরিপথে ভাল স্রোত ছিল । জুতাগুলো খুলে এক কোণায় লুকিয়ে ঝিরিপথ ধরে হাঁটা শুরু করলাম । উত্তেজনা এবার এমন পর্যায়ে উঠল যে হাত পা প্রচণ্ড কাপাকাপি শুরু করল। ঝিরিপথের কোথায়ও হাঁটু পানি, কোথায়ও বুক সমান পানি আবার কিছু স্থানে প্রায় গলা সমান পানি ছিল । পাথর গুলো ছিল অনেক পিচ্ছিল। একবার পরলেই হাত-পা তো ভাঙ্গবেই, মাথা ও ফাটবে।  এইভাবে ৩০ মিনিট ধরে চলতে থাকলাম তারপর একটা বাঁক ছিল বাঁকটা ঘুরতেই স্বর্গীয় রুপ নিয়ে চোখের সামনে এল হামহাম। আহ!!! কি যে তার রুপ। বাতাসে হামহাম এর শীতল পানির ছোঁয়া ভুলিয়ে দিল সকল বেদনা । মোহিত নয়নে গিলতে থাকলাম সেই অপরুপ দৃশ্য ।

বর্ষায় ঝর্না তার পুরো যৌবন ফিরে পেয়েছে। পানি এসে উপর থেকে আমাদের গা ছুয়ে নিচে এসে পড়ছে আর আমরা লোলুভ মনে টা শুধু দেখছি আর দেখছি। 

কিন্তু একটা ব্যাপারে সাবধান, ঝরনার উপর থেকে অনেক সময় বাঁশ,গাছের ডাল, পাথর পড়ে পানির সাথে। এটা থেকে সাবধান। হামহাম ঝর্নায় এরকম দুর্ঘটনায় অনেকেই মারা গেছে। তাদের লাশ নিয়ে কেউ ফিরে আসবে সেটাও সম্ভব হয় না। পরে হেলিকপটার নিয়ে আর্মিরা সেই লাশ নিয়ে এসেছে। ঐখানের লোকজনের কাছে এটা শুনেছি।

যাই হোক অনেক গোসল এর পর সবার ক্ষুধা লাগলো। সাথে ছিল শুকনা খাবার। কিন্তু খাওয়ার পানি নেই। অন্য গ্রুপ থেকে পানি নিয়ে কোনরকম  চালালাম। আর ঐ দুই বন্ধুর (যাদের উপর খাবার পানির দায়িত্ব ছিল ) গুষ্টি উদ্ধার করতে লাগলাম সবাই।

তারপর কিছু ছবি তুলে প্রচণ্ড রকমের শান্তি আর ফিরে আসার চাপা বেদনা দিয়ে এগোতে লাগলাম ঝিরিপথ ধরে । হাঁটতে হাঁটতে চলে এলাম আবার সেই পাহারের খাড়া পথের সামনে । জুতা বের করে পরে নিয়ে উঠতে লাগলাম কিছুক্ষণ ওঠার পর মনে হল শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে সাথে সাথে দারিয়ে পরলাম । একটু জিরিয়ে আবার একটু উঠলাম এবার বসে পরলাম এভাবে চলতে থাকল যতক্ষণ না পর্যন্ত চুয়ায় পৌঁছলাম। চুড়ায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলাম এরপর আবার চলা। এবার বেশিরভাগই নিচে নামার পথ তাই কষ্ট আর তেমন একটা হল না । চলতে চলতে এন্ট্রি পয়েন্ট দিয়ে আবার ফিরে এলাম কলাবাগানে ।

এখান থেকে জীপে করে আবার শ্রীমঙ্গল তারপর সেখান থেকে বাসে করে সিলেট, পরবর্তী গন্তব্য বিছনাকান্দি। এটা নিয়ে পরে আবার লেখা যাবে।

তবে বলতে চাই হামহাম ছিল বাংলাদেশের ভেতর আমার করা ট্যুর গুলোর ভেতর সবথেকে ভয়ঙ্কর। এতটা কষ্ট হত না যদি আমরা আরও একটু সাবধান হতাম। 

বিঃদ্রঃ
হামহামে যাবার সময় ভারি কিছু সাথে নিবেন না । এতে কষ্ট অনেক বেড়ে যাবে। আর হামহামে বসে যা খাবেন তা অবশ্যই সাথে করে নিয়ে আসবেন। অযথাই প্রকৃতির এই সুন্দর রুপকে আপনার পাশবিক কর্ম দ্বারা নষ্ট করবেন না । আর জোঁক থেকে বাঁচতে লবন, সরিষার তেল, তামাক সাথে নিবেন।

কোথায় থাকবেনঃ
শ্রীমঙ্গলে থাকার মত খুব বেশি হোটেল নেই তবে কম খরচে হোটেল মহসিন প্লাজা, হোটেল তাজমহল, হোটেল গ্র্যান্ড শ্রীমঙ্গল, হোটেল আল- মদিনা এসব স্থানে থাকতে পারেন। খরচঃ  ৪০০/- থেকে ১০০০/- 

কি খাবেনঃ 

খাবারের দোকানের অভাব হবে না। 

প্রয়োজনীয় কিছু তথ্যঃ

আমাদের গাইডের নম্বরঃ 

খরচঃ

৬৩০০/- (খাওয়াতে খরচ একটু বেশি করে ফেলসিলাম নাহলে আরও কম হত

========================================================================

মন্তব্য অথবা কোন প্রশ্ন থাকলে নিচে কমেন্ট করুন।

এবার বের হয়েছিলাম শুধুমাত্র হাম-হাম ঝর্ণা দেখার উদ্দেশে। আমরা ৯ জন। আমাদের পুরা হাম হাম ট্রিপটা ছিল অ্যাডভেঞ্চার এ ভর্তি।

Post a Comment

[blogger]

Author Name

{picture#https://www.facebook.com/photo.php?fbid=1196479430442738} YOUR_PROFILE_DESCRIPTION {facebook#https://www.facebook.com/alwasikbillah} {twitter#https://twitter.com/awasikb} {google#https://plus.google.com/112469283873821392454} {instagram#https://www.instagram.com/awasikb}

Contact Form

Name

Email *

Message *

Powered by Blogger.